ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫ , ২৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ফের আইটেম গানে নাচবেন তামান্না সম্মানসূচক পাম ডি’অর পাচ্ছেন রবার্ট ডি নিরো মালাইকার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি সিআইডিতে আসছে নতুন এসিপি বাংলাদেশে আসছেন পাকিস্তানি গায়িকা আইমা বেগ হলে বাড়লো জংলির শো ছেলেকে নিয়ে ছুটি কাটাতে সিঙ্গাপুরে অপু নতুন ছবি নিয়ে পর্দায় আসছেন মোশাররফ করিম সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের নির্দেশ মাউশির ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘরে ঢ়ুকে নারীকে কুপিয়ে হত্যা মোদির মতো নেতাকে ছুড়ে ফেলার বিকল্প নেই -সারজিস আট মাসের শিশুকে অপহরণের পর বিক্রি, ৮ দিন পর যশোর থেকে উদ্ধার ঈদযাত্রার ১১ দিনে সড়কে ঝরল ২৪৯ প্রাণ নওগাঁ বাড়ির ভেতরে মিললো ভাইবোনের মরদেহ পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ নয় জাটকা সংরক্ষণের আহ্বান মৎস্য উপদেষ্টার ডিজিএফআই কর্মকর্তা হত্যা মামলায় আরসা প্রধানসহ ১০ জন কারাগারে মার্চে ৪৪২ নারী নির্যাতনের শিকার, ধর্ষণ ১৬৩ -মহিলা পরিষদ ১০ এপ্রিলের মধ্যে যোগদানের নির্দেশ প্রধান শিক্ষকদের বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে স্টার্টআপ খাতে ৯০০ কোটি টাকার তহবিল সবার অংশগ্রহণে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের প্রচেষ্টা -আলী রীয়াজ

নির্বাচনে সাপোর্ট দেয়া সাংবাদিকদের ‘দেখা হবে’-প্রেস সচিব

  • আপলোড সময় : ২১-১১-২০২৪ ১২:৩৪:২৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২১-১১-২০২৪ ১২:৩৪:২৬ পূর্বাহ্ন
নির্বাচনে সাপোর্ট দেয়া সাংবাদিকদের ‘দেখা হবে’-প্রেস সচিব
ফ্যাসিবাদকে সমর্থন দেয়া সাংবাদিকদের সরিয়ে দিতে হবে: সমন্বয়ক তাহমিদ


নির্বাচনে সাপোর্ট দেয়া সাংবাদিকদের ‘দেখা হবে’ বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, ১৬ বছরে যে ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ তৈরি হলো, তাদের পেছনেও কাজ করেছেন কতিপয় কিছু সাংবাদিক। কারা করেছেন; কীভাবে করেছেন সেগুলো দেখতে হবে। যারা ২০১৪ ও ২৪ এর নির্বাচনে ভয়াবহভাবে সাপোর্ট দিয়েছেন তাদের দেখা হবে। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র ও জনতার গণঅভ্যুত্থানে অনেক সাংবাদিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তাদেরকে আমি স্যালুট জানাই। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে “জুলাই গণহত্যায় গণমাধ্যমের ভূমিকা: জবাবদিহিতা ও সংস্কার” শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুল আলম, নির্বাচনের আগে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বলা হতো ওরা জঙ্গি ও সন্ত্রাসী। তাদেরকে নির্বাচন করতে দেয়া যাবে না। এসব গণমাধ্যমে প্রচার করা হতো। আবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস কনফারেন্সে কী ধরনের ফ্যাসিবাদি বক্তব্য দেয়া হয়েছে। কার কী ভূমিকা ছিল সেগুলো খুঁজে বের করা হবে। তিনি বলেন, জুলাই- আগস্ট আন্দোলনে কিছু গণমাধ্যম ছাত্র-জনতাকে সন্ত্রাসী অ্যাখ্যা দিয়েছিল। জুলাই-আগস্ট ছাত্র ও জনতার গণঅভ্যুত্থানে অনেক সাংবাদিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তাদেরকে আমি স্যালুট জানাই। কিন্তু ১৬ বছরে যে ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ তৈরি হলো, তাদের পেছনেও কাজ করেছেন কতিপয় কিছু সাংবাদিক। কারা করেছেন; কীভাবে করেছেন সেগুলো দেখতে হবে। যারা ২০১৪ ও ২৪ এর নির্বাচনে ভয়াবহভাবে সাপোর্ট দিয়েছেন তাদের দেখা হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের মধ্যে যেন ফ্যাসিবাদি আচরণ তৈরি না হয়। ওরা যেভাবে শিবির ট্যাগ দিয়ে ক্রিটিসাইজ করতো আমরাও যেন সেটি না করি। যেভাবে ওরা মুক্ত সাংবাদিকতাকে বাধাগ্রস্ত করেছে আমরা যেন সেটি না করি।
ফ্যাসিবাদকে সমর্থন দেয়া সাংবাদিকদের সরিয়ে দিতে হবে: গত ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদ সরকারকে সমর্থন দিয়ে আসা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তাদেরকে দায়িত্বের জায়গা থেকে সরিয়ে দিতে হবে বলে দাবি তুলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তাহমিদ মুনতাসীর চৌধুরী। তিনি বলেন, যারা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সংবাদমাধ্যমকে ফ্যাসিবাদের দোসর বানিয়ে রেখেছে, যারা সংবাদ ‘এডিট’ করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে প্রচার করেছে তারা এখনও স্ব স্ব দায়িত্বে বহাল তবিয়ত। তাদের সরিয়ে দিতে হবে। তাহমিদ মুনতাসীর চৌধুরী বলেন, আমরা এটা স্বীকার করি গত ১৫ বছরে সাংবাদিকতাটা স্বাধীন ছিল না। এখন সংবাদপত্র যেন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে সেটা নিয়ে আমাদের কাজ করা উচিত। এবং একইসঙ্গে গত ১৫ বছরে এই সংবাদমাধ্যমগুলোকে যারা ফ্যাসিবাদের দোসর বানিয়ে রেখেছিল, যারা এর জন্য দায়ী ছিল এবং আমরা দেখেছি যে এখনও তারা বহাল তবিয়তে বসে আছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, তাদেরকে সরাতে হবে। ‘ফ্যাসিবাদ সরকার পতনের ১০০ দিন পালন করছি আমরা। কিন্তু যেই ফ্যাসিস্ট সাংবাদিকরা সেই ভাবে সংবাদ প্রকাশ করত, যারা আমাদেরকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিতো, মিডিয়াতে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করত যে এটা তৃতীয় পক্ষের আন্দোলন, এটা তৃতীয় শক্তি আন্দোলন, বিচ্ছিন্নতাবাদী, এরা সন্ত্রাসী সেই সাংবাদিকরা কিন্তু এখনও নিজ নিজ জায়গায় বসে আছে। তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না এবং নেয়া হবে না এটা আমরা জানতে চাই’- যোগ করেছেন তিনি। আগামীতে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাতে যেন কোনো বাঁধা না থাকে সে বিষয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি, সাংবাদিকদের বা সংবাদ মাধ্যমের একটা আদর্শীক বায়াস্টনেস থাকবে, এটা স্বাভাবিক। আন্তর্জাতিকভাবেও তা দেখা যায়। কিন্তু সেটা থাকার পরেও সত্য এবং বস্তুনিষ্ঠ যে সাংবাদিকতা সেই সাংবাদিকতাটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। এটা যেন না হয় যে নতুন সরকারের অধিনে বা নতুন সরকার এলে সাংবাদিকদের আবারও ভয় দেখিয়ে যেন আবদ্ধ করা না হয়।
বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) কখনো বাংলাদেশের মানুষের কথা বলে না অভিযোগ তুলেছেন তিনি। নতুন সরকার গঠনের পর সেই বিটিভিতে কি কি পরিবর্তন করা হয়েছে সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাহমিদ মুনতাসীর চৌধুরী। তিনি বলেছেন, বিটিভি বা বাসস হচ্ছে স্বায়ত্তশাসিত সংবাদমাধ্যম। কিন্তু বিটিভি কেন সরকারের দাসত্ব করবে? বিটিভি কেন বাংলাদেশের মানুষের কথা শুনবে না? গত ১৫ বছর বিটিভিকে দেখেছি জনগণের পক্ষে কোনো নিউজ প্রকাশ করেনি। আমার একটা প্রশ্ন, নতুন সরকারের কাছে এই ১০০ দিনে বিটিভিতে আমরা কি পরিবর্তন আনতে পেরেছি?
মিডিয়া সংস্কারের জন্য নিচের পদক্ষেপগুলো নেয়া যেতে পারে: ১. স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকার গণমাধ্যমের জন্য অনেকগুলো নীতি ও আইন প্রণয়ন করে গেছে। কিন্তু সবই করেছে নিয়ন্ত্রণের আকাক্সক্ষা  থেকে। তাই বিদ্যমান সব নীতি-আইন থেকে নিয়ন্ত্রণমূলক ধারা পরিমার্জনা করে একটি স্বাধীন গণমাধ্যম ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। এর মাধ্যমে গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সঠিক তথ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার সম্ভব হবে। ২. বাংলাদেশের বেশিরভাগ টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমোদন রাজনৈতিক বিবেচনায় দেয়া হয়েছে। গণমাধ্যমের যেসব মালিক ও নির্বাহীরা গণমাধ্যমকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে তৈরি করেছে, তদন্ত সাপেক্ষ তাদেরকে বিচারের আওতায় এনে, স্বাধীন সাংবাদিকতা করার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ৩. মিডিয়ার মালিকানা ও অর্থায়নের উৎস সম্পর্কে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। যাতে রাজনৈতিক প্রভাব বা স্বার্থপরায়ণতা এড়ানো যায়। বড় করপোরেট ও রাজনৈতিক দলের মালিকানাধীন মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনি কাঠামো তৈরি করা যেতে পারে। ৪. যে কোনো সময় যে কোনো টেলিভিশন ও পত্রিকা সরকার বন্ধ করে দিতে পারার যে ভয়ংকর পদ্ধতি বা নীতি রয়েছে, তা চিরতরে বন্ধ করে দিতে হবে। ভবিষ্যতে আমার দেশ, দিগন্ত টেলিভিশন ও ইসলামিক টিভির মত কোন গণমাধ্যম যাতে বন্ধ না হয়। ৫. সাংবাদিকদের নিয়মিত বেতন ও পেশাগত সুরক্ষার জন্য টেকসই গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে একটি গণমাধ্যম কমিশন ও নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি। ৬. গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য অভিন্ন ওয়েজবোর্ড প্রণয়ন করতে হবে। অনতিবিলম্বে নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করতে হবে। শ্রম আইন অনুযায়ী সংবাদকর্মীদের মাঝে লভ্যাংশ বণ্টন করার ব্যবস্থা করতে হবে। ৭. সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাসহ সব হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের বিচার নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের গুম, নির্যাতন ও হয়রানির সঙ্গে জড়িতদের বিচার নিশ্চিতে কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। ৮. একটি স্বতন্ত্র মিডিয়া কমিশন গঠন করা যেতে পারে, যা সরকারের হস্তক্ষেপ ছাড়াই মিডিয়ার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করবে। পাশাপাশি সাংবাদিকদের চাকরির সুরক্ষা, বেতনসহ নানা সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতে কাজ করবে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স